গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে ১৩ কারখানা বন্ধ ঘোষণা

0

শ্রমিক আন্দোলনে দিনভর উত্তাল থাকার পর গাজীপুরে ১৩টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ছয়জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম।

তিনি বলেন, সোমবার শ্রমিক আন্দোলনের মুখে ১৩টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১২টি পোশাক কারখানা ও একটি খাদ্য উৎপাদন তৈরি কারখানা। এর মধ্যে খাদ্য উৎপাদন তৈরি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাকিগুলো এক দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার বলেন, সমস্যা কিন্তু শুধু শ্রমিকদের আছে এমন নয়, সমস্যা মালিকদেরও আছে। আজকে (সোমবার) টঙ্গীতে যেটা হলো, দেড়-দুই মাসের বেতনের জন্য আন্দোলন হয়েছে। শ্রমিকদের বারবারই বেতন দেবে বলে মালিকপক্ষ আশ্বস্ত করেছে। কিন্তু দিতে পারেনি।

এ ছাড়া গাজীপুরের সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস্ লিমিটেড নামের একটি গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকরা ১২ দফা দাবি জানিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন।

সোমবার সকাল ৮টা থেকে ওই কারখানার শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করে কাজে যোগ না দিয়ে হাজিরা বোনাস বৃদ্ধির দাবিসহ কয়েকটি দাবি জানিয়ে কারখানার অ্যাসেম্বলি পয়েন্টে অবস্থান নেন। পরে বেলা সাড়ে ৯টার দিকে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল, নাইট বিলসহ ৮টি দাবি মেনে নেয়। ১২টি দাবি থেকে ৮টি দাবি মেনে নিলেও বাকি চারটি দাবি মেনে নেওয়ার দাবি জানিয়ে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে। পরবর্তীতে চারটি দাবি মেনে নিলে শ্রমিকরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে গেলে বেলা ১২টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

অপরদিকে, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় একটি খাদ্য উৎপাদন তৈরি কারখানায় বিক্ষোভের সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ছয়জনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। সোমবার সকালে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকে কোকোলা ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড কারখানা এলাকায় বিক্ষোভের সময় তাদের আটক করা হয়।

শিল্প পুলিশ ও কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকার কোকোলা ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা রোববার সকালে কাজে যোগদান করেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শ্রমিকরা হঠাৎ করে মজুরি ন্যূনতম সাড়ে ১২ হাজার টাকা, হাজিরা বোনাস ৮০০ টাকা, সাধারণ ও বাৎসরিক ছুটিসহ ১২ দফা দাবিতে কারখানার ভেতর বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকরা কারখানার পাশে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় কারখানা কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে।

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার পরও ফের সোমবার সকালে শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে কিছু শ্রমিক কারখানা বন্ধ থাকার পরও জোরপূর্বক ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর করার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ, থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ সময়ে কারখানার ভেতরে অবৈধভাবে প্রবেশ করা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ছয়জনকে আটক করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.