বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করে শাস্তি পাওয়া ৫৭ বাংলাদেশীকে দেশটির সরকার ক্ষমা করেছেন আগেই। তাদের মধ্য থেকে মুক্তি পাওয়া ১৪ বাংলাদেশী আজ (শনিবার) রাত সোয়া ৯টায় একটি ফ্লাইটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌছান। তাদেরকে জাতীয় বীর আখ্যা দিয়ে প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের বিমানবন্দর ডেক্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফুলেল শুভেচছা জানিয়ে রিসিভ করে গন্তব্য পৌছানোর ব্যবস্থা করে দেন বলে ওয়েজ আর্নাস কল্যান বোর্ডের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানা গেছে।
দেশে ফেরাদের মধ্য দুজনের বাড়ি ঢাকায়। বাকী ১২ জনের বাড়ি চট্টগ্রামে বলে জানা গেছে। তারা ট্রানজিট ফ্লাইটে রাতেই চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন।
এর আগে শনিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় তাদের ঢাকায় ফেরার বিষয়টি জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ক্ষমা পাওয়া ৫৭ বাংলাদেশীর মধ্যে ১৪ জন আজ (শনিবার) সন্ধ্যা ৭টায় দেশে ফিরবেন। বাংলাদেশীদের বহনকারী ফ্লাইটটি সন্ধ্যা ৭টায় প্রথমে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। পরে একই ফ্লাইট রাত ১০টায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সাথে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক পরবর্তী ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছিলেন, গত ২৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার সাথে টেলিফোনে কথা হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের। সেখানে বড় অংশজুড়ে ছিল ৫৭ জনের শাস্তি মওকুফের বিষয়টি। প্রধান উপদেষ্টা প্রেসিডেন্টকে প্রবাসী শ্রমিকদের ক্ষমা করে দেয়ার অনুরোধ করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট তার কথা রেখেছেন। প্রধান উপদেষ্টা আজ (মঙ্গলবার) এ সুখবরটি পান এবং জানিয়ে দেন।
তিনি বলেন, তাদের ক্ষমা করানো ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। এখন তাদের বিষয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে কথা হচ্ছে।
তারা জানিয়েছেন, ওই দেশে সংশ্লিষ্ট দফতরের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। তাদের বিষয়ে কী হবে, তা নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় ৫৭ বাংলাদেশীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছিল দেশটির আদালত। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।